North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

অটোচালক খোকনের সততায় ফিরল ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার!

নৈতিক অবক্ষয়ের যুগে এক দীপ্ত উদাহরণ স্থাপন করলেন বগুড়ার কলেজছাত্র ও সিএনজি অটোচালক খায়রুল ইসলাম খোকন (২৫)। যাত্রীর ফেলে যাওয়া প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়ে দেখালেন, সততা এখনো জীবিত।

খোকন বগুড়া সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজে ব্যবস্থাপনায় অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। লেখাপড়ার খরচ চালাতে তিনি দিনভর অটোরিকশা চালান। ২৯ মার্চ, ইফতারের ঠিক আগে বনানী এলাকায় এক যাত্রী নামার পর খোকন দেখেন, পেছনের সিটে একটি কালো ব্যাগ রয়ে গেছে। খুলে দেখেন—ভেতরে রয়েছে ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১৫ হাজার টাকা!

প্রথমেই তিনি যাত্রীকে খুঁজতে শুরু করেন বনানী ও সাতমাথা এলাকায়। সন্ধান না পেয়ে পরিচিত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলমগীর হোসেনকে খবর দেন। বাড়িতে ফিরে মা-কে জানালে, মা নির্দেশ দেন—“অমানত ফিরিয়ে দেওয়াই সবচেয়ে বড় ধর্ম।”

পরে পুলিশ ও সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয় যাত্রী মোহাম্মদ শাহিনকে, যিনি পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বাসিন্দা এবং একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী। ওইদিন তিনি ১৮ ভরি স্বর্ণ কিনে বগুড়া থেকে ফিরছিলেন, হঠাৎ তাড়াহুড়ায় একটি ব্যাগ সিএনজিতেই ফেলে যান।

খোকনের সততার গল্পে মুগ্ধ পুলিশ, স্থানীয়রা এবং ব্যবসায়ী শাহিন। শুক্রবার রাতে সদর থানায় এক আবেগঘন মুহূর্তে সেই ব্যাগটি তার মালিকের হাতে তুলে দেন খোকন। শাহিন কৃতজ্ঞতায় অটোচালক খোকনকে আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করেন।

শাজাহানপুর থানার এসআই আবদুল কুদ্দুস জানান,
“খোকনের মতো তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যতের আশা। তার সততা আমাদের সমাজের জন্য এক বড় বার্তা।” আগামী ৭ এপ্রিল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে খোকনকে ‘সততার পুরস্কার’ দেওয়া হবে। খোকন বলেন, “এই ব্যাগে কত টাকা ছিল, তা বড় কথা নয়। মানুষের হারানো ভরসা ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি গর্বিত।”

Scroll to Top