North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন খনিজ চুক্তি সই

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একসাথে গড়ছে শক্তিশালী খনিজ জোট। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেস্যান্ট ও ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেঙ্কো ওয়াশিংটনে চুক্তিতে সই করেন।

দীর্ঘ আলোচনা শেষে এই ঐতিহাসিক সমঝোতায় সম্মত হয় দুই দেশ, যার মূল লক্ষ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের খনিজ ও জ্বালানি খাতকে ঘিরে একটি পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল গঠন করা। মার্কিন সেক্রেটারি বেস্যান্ট জানান, এই চুক্তি শুধু বিনিয়োগ নয়, ইউক্রেনের স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকেও এক বড় পদক্ষেপ।

বিশ্বের বিরল ও প্রয়োজনীয় খনিজের অন্যতম বড় ভান্ডার ইউক্রেনে রয়েছে। গ্রাফাইট, টাইটানিয়াম ও লিথিয়ামের মতো খনিজ সম্পদ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও ভারী শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনের হাতে বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ বিরল খনিজের নিয়ন্ত্রণ থাকায়, বিকল্প উৎস খোঁজাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম কৌশলগত লক্ষ্য।

২০২২ সালে রুশ আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে বিপুল পরিমাণ সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। ট্রাম্প প্রশাসন চেয়েছিল এসব সহায়তার বিনিময়ে নিশ্চিত বিনিয়োগ নিরাপত্তা। যদিও প্রাথমিকভাবে কিছু জটিলতা দেখা দিলেও, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন পক্ষ কিছু শর্তে নমনীয়তা দেখায়।

ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেঙ্কো জানান, এই তহবিল বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করে তুলবে। প্রকল্পে তেল, গ্যাস ও খনিজ খাত থাকলেও মালিকানা থাকবে ইউক্রেনেরই। তবে বাস্তবায়নের আগে পার্লামেন্টের অনুমোদন লাগবে।

এই চুক্তির আওতায় ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহ নানা সামরিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “এই চুক্তি সই করলেই বোঝা যাবে ইউক্রেন কতটা বাস্তববাদী। রাশিয়া অনেক বড় শক্তি। চুক্তির মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ফিরে আসবে।”

চুক্তি নিয়ে শেষ মুহূর্তেও কিছু টানাপোড়েন চলেছে। পুনর্গঠন তহবিলের নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছতা নিয়ে দুই দেশের মতবিরোধ শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে ওঠা গেছে। মূলত ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে মতপার্থক্য এবং ভ্যাটিকানে নির্ধারিত বৈঠক না হওয়ায় সময়ক্ষেপণ হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তি শুধু ইউক্রেনের অর্থনীতির জন্য নয়, বিশ্ব খনিজ রাজনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলবে। এখন দেখার বিষয়, এর বাস্তবায়ন কতটা কার্যকর হয় এবং রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কতটা নতুন মাত্রা পায়।


Scroll to Top