যুদ্ধবিরতির ঘোষণা থাকলেও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মাঝেই ভারতের পূর্বাঞ্চলে নতুন করে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে দিল্লি—চীনের সঙ্গে। অরুণাচল প্রদেশের ২৭টি ভৌগোলিক স্থানের নাম বদলে ফের উত্তপ্ত করেছে পরিস্থিতি বেইজিং।
চীনের সিভিল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয় গত ১১ মে অরুণাচলের ১৫টি পাহাড়, ৪টি সড়ক, ২টি নদী, ১টি হ্রদ এবং ৫টি গ্রামসহ মোট ২৭টি স্থানের নতুন নাম ঘোষণা করেছে। এটি তাদের ‘নেইমিং ক্যাম্পেইন’-এর পঞ্চম ধাপ, যা শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে।
এর আগে ২০১৭ সালে ৬টি, ২০২১ ও ২০২৩ সালে ১৫টি করে এবং চলতি বছরের মার্চ মাসেই ৩০টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে চীন।
এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, “অরুণাচল প্রদেশ ছিল, আছে এবং চিরকাল ভারতের অংশই থাকবে। চীনের নাম বদলের খেলায় বাস্তবতা পাল্টাবে না।”
চীন দীর্ঘদিন ধরে অরুণাচলকে ‘জাংনান’ নামে ডাকে এবং এটিকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে আসছে। এ নিয়েই দুই দেশের মধ্যকার বিরোধ দিনে দিনে ঘনীভূত হয়েছে।
২০২০ সালে গালওয়ানে ভারত-চীন সেনাদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই পক্ষের সেনা হতাহত হয়। সেই পর থেকেই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় চালুর মাধ্যমে কিছুটা সম্পর্ক উন্নয়নের আভাস মিলেছে।
এদিকে, চীনের সঙ্গে ভারতের এই নতুন বিরোধ এমন সময় সামনে এল, যখন পাকিস্তানের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক ইতিমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ। চীনের সরাসরি পাকিস্তানকে সমর্থন দেওয়ায় ভারতের জন্য কৌশলগত পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
চীন, পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যকার এই বহুমুখী উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।