North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

আলুর ক্ষতির পর বোরোতেও সঙ্কট! হিলিতে মাজরা পোকায় বিপর্যস্ত কৃষকরা

ছবি: সংগৃহিত

হিলি প্রতিবেদক। দিনাজপুরের হিলি অঞ্চলের কৃষকরা এবার বোরো ধানে মাজরা পোকার হঠাৎ আক্রমণে পড়ে চরম দুশ্চিন্তায়। আলু চাষে লোকসানের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই ধানের শীষ বের হওয়ার সময় এই পোকা গাছের গোড়া কেটে দিচ্ছে, ফলে শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে—ফলন মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ৭ হাজার ৬২৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৯৪ টন। অধিকাংশ জমির ধান ইতোমধ্যে শীষ বের করেছে, ফলে পোকা নিয়ন্ত্রণে থাকলে আশানুরূপ ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। তবে কিছু এলাকায় পানির সংকট ও পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

গোহাড়া গ্রামের চাষি রতন কুমার জানান, ‘‘আলুর বাজারে দাম না থাকায় যে ক্ষতি হয়েছিল, ভেবেছিলাম বোরো ধানে তা পুষিয়ে উঠবো। কিন্তু মাজরা পোকা ধানের শীষ শুকিয়ে দিচ্ছে। ৩-৪ বার স্প্রে করার পরও কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।’’

একই গ্রামের আরেক কৃষক উৎপল কুমার বলেন, ‘‘বোরো ধানে ভালো ফলনের জন্য শীষ বের হওয়ার আগে এবং পরে কীটনাশক প্রয়োগ করেছি। তারপরও মাজরা পোকা আটকাতে পারিনি। প্রতি বিঘায় যেখানে ২০-২২ মণ পাওয়ার আশা ছিল, সেখানে ১৫-১৬ মণ ধানও পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে।’’

জালালপুরের কৃষক ইউসুফ হোসেনও একই সমস্যায় রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তিন-চারবার কীটনাশক ব্যবহার করেছি, কিন্তু পোকা যেন কিছুতেই যাচ্ছে না। উৎপাদন কমে গেলে আরেকবার আলুর মতো ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’’

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, ‘‘কিছু জমিতে ছায়াযুক্ত পরিবেশে মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। কৃষকদের আলোক ফাঁদ ব্যবহার ও কীটনাশক স্প্রের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু বেশিরভাগ জমির ধান বের হয়ে গেছে, তাই পোকা খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলে মনে হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন মোটামুটি ভালোই হবে।’’

Scroll to Top