কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া বোরো ধানের জন্য ভয়ানক কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলনের শীষে চিটা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শত শত কৃষক। শুধু তাই নয়, ক্ষতিপূরণ এবং ইটভাটা বন্ধের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন তারা।
সোমবার(২৮ এপ্রিল) বিকেলে কুটিরচর, চর বন্দবেড় ও খঞ্জনমারা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা একত্র হয়ে রৌমারী উপজেলা প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের অভিযোগ, অন্তত ২৫ একর জমির ধান পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর আরও ২০০ একরে ধানের শীষে চিটা দেখা যাচ্ছে।
ইট পুড়ানোর সময় নির্গত দূষিত গ্যাস ধানগাছের জীবনচক্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইডসহ একাধিক ক্ষতিকর উপাদান ধান ও অন্যান্য ফসলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
স্থানীয় বাসিন্দা আইউব আলী জানান, ‘এই ইটভাটাগুলোতে গাছ পোড়ানো হয়, শিশু-কিশোরদের দিয়ে কাজ করানো হয়—সবকিছুই অবৈধভাবে চলছে।’
আরেক কৃষক হাবিল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ফসল শেষ, ফলের গাছ মারা যাচ্ছে, মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।’
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, চর বন্দবেড় কমিউনিটি ক্লিনিকের অবস্থাও ভয়াবহ, ধোঁয়ার কারণে রোগীরাও সেখানে যেতে চান না। তাই তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্লিনিকের বিকল্প হিসেবে নিজের বাড়ির একটি ঘর ছেড়ে দিয়েছেন।
রৌমারী উপজেলার অন্তত ১২টি ইটভাটার মধ্যে ৬টি ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার। তবে বাকি ভাটাগুলো এখনও গোপনে চালু রয়েছে কি না, তা নজরদারিতে রয়েছে বলে জানান তিনি।