কঠিন শর্ত মানবে না সরকার, নিজস্ব সামর্থ্যেই বাস্তবসম্মত বাজেটের প্রতিশ্রুতি
আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফ ও এডিবির সহায়তা ছাড়াই সাহসী ও বাস্তবসম্মত বাজেট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ইতালির মিলানে এডিবির বার্ষিক সভা শেষে তিনি এই বার্তা দিয়েছেন। অন্যদিকে, রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ—এপ্রিলেও এসেছে ২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪.৬ শতাংশ বেশি।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, IMF ও ADB-এর বাজেট সহায়তা ছাড়া গেলেও বাংলাদেশ একটি সহজে বাস্তবায়নযোগ্য ও বাস্তবসম্মত বাজেট দেবে। এডিবির দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াং-এর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি জানান, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে সংস্কার এবং বাণিজ্যিক পরিবেশে উন্নয়ন নিয়েও আশাবাদ প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, IMF-এর সঙ্গে আলোচনা চলছে, তবে কঠিন শর্ত মেনে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের। বাজেট সহায়তা নিয়ে হুল্লোড় নয়, বরং ব্যয় সংকোচন ও দক্ষতা বাড়ানোই হবে মূল লক্ষ্য। ADB-এর পক্ষ থেকেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি প্রশংসিত হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
এদিকে, দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। মার্চে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার পাঠানোর পর এপ্রিলেও এসেছে ২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২৪ সালের এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল) প্রথম ১০ মাসেই দেশে এসেছে ২৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহে এমন প্রবৃদ্ধি চলমান থাকলে বাজেট সহায়তার অভাব কিছুটা হলেও পূরণ করা সম্ভব। হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলেও মত দিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ একদিকে যেমন বৈদেশিক সহায়তা ছাড়াই বাজেট দেওয়ার আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছে, অন্যদিকে রেমিট্যান্সে ধারাবাহিক রেকর্ড প্রমাণ করছে প্রবাসীদের দেশের প্রতি আস্থা। সামনে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকলেও এই দুই দিকেই উজ্জ্বলতা কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে অর্থনীতিবিদদের।