North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

কান্না শুনে কুড়িয়ে পাওয়া সেই নবজাতক ফিরল মায়ের কোলে

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে কান্নার শব্দ শুনে বাড়ির পাশের ওয়াশরুমের কাছে কুড়িয়ে পাওয়া মাত্র ৮ দিনের এক কন্যাশিশু অবশেষে ফিরে গেল তার মায়ের কোলে। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (২৪ মে) বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির নাম এখনো জানা যায়নি, তবে সে জাহানারা বেগম ও নুর মোহাম্মদ দম্পতির সন্তান। তাদের বাড়ি নাগেশ্বরী উপজেলার বাঁশেরতল বকশির খামার এলাকায়।

❝ওইদিন ভোরে কান্নার শব্দ না শুনলে হয়তো আজও শিশুটির পরিচয় অজানাই থেকে যেত❞
গত শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দা মিলন মিয়া ও তার স্ত্রী আসমাউল হোসনা তাদের বাড়ির পাশে নবজাতকের কান্না শুনে বাইরে বেরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও যখন কেউ দাবি করেনি, তখন শিশুটিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ সাধারণ ডায়েরি করে শিশুটিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার ছবি ও খবর ছড়িয়ে পড়লে শিশুটির সৎভাই বিষয়টি দেখে তার মাকে ফোনে জানান। রাতেই জাহানারা বেগম থানায় যোগাযোগ করেন।

বাবার মানসিক সমস্যাই এই ট্র্যাজেডির পেছনে?
তদন্তে উঠে আসে, গত ১৭ মে সিজারিয়ানের মাধ্যমে জাহানারা বেগম সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু তার স্বামী নুর মোহাম্মদ কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারানো অবস্থায় থাকায় শুক্রবার সকালে কাউকে কিছু না বলেই নবজাতককে নিয়ে ভূরুঙ্গামারীতে খালাতো বোন আসমাউল হোসনার বাড়ির পাশে রেখে চলে যান।

ভাগ্য ভালো, শিশুটির কান্না শুনেই তাকে উদ্ধার করা হয় এবং হাসপাতালে ভর্তির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে নবজাতকটি সুস্থ আছে।

প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় ফিরে পেল নিজের পরিচয়
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম জানান, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও যাচাই শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), অফিসার ইনচার্জ (ওসি), এবং সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়।

ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আল হেলাল মাহমুদ নিশ্চিত করেন, শিশুটির পরিচয় শনাক্ত ও যাচাই-বাছাই শেষে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Scroll to Top