North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

কাশ্মীরের শিক্ষককে সন্ত্রাসী বলে অপবাদ, ভারতীয় মিডিয়ার ভুল তথ্যের শিকার এক নিরীহ পরিবার

ছবি: সংগৃহিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, নর্থ নিউজ ডট লাইভ। পাকিস্তান থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে ৭ মে সকালে কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার জিয়া-উল-উলুম মাদ্রাসায় নিহত হন ৪৬ বছর বয়সী শিক্ষক ক্বারী মোহাম্মদ ইকবাল। দীর্ঘ দুই দশক ধরে তিনি এই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছিলেন। তবে তার মৃত্যুর পরপরই ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম তাকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে খবর প্রকাশ করে, যা তার পরিবারের জন্য আরও বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে।

ভুল তথ্যের বিস্তার: নিউজ১৮, জি নিউজ এবং রিপাবলিক ওয়ার্ল্ডসহ কয়েকটি চ্যানেল দাবি করে যে, ইকবাল পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী শিবিরে ছিলেন এবং লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য ছিলেন। তবে পুঞ্চ জেলা পুলিশ ৮ মে এক বিবৃতিতে এই দাবিগুলোকে ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করে এবং জানায় যে, ইকবাল একজন সম্মানিত ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন, যার সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না।

পরিবারের প্রতিক্রিয়া: ইকবালের ভাই ফারুক আহমেদ বলেন, “আমার ভাই একজন শিক্ষক ছিলেন, কিন্তু তারা তার দাড়ি ও টুপি দেখে তাকে সন্ত্রাসী বলে অপবাদ দিয়েছে। মৃত মানুষ তো নিজের হয়ে কিছু বলতে পারে না!” তিনি আরও জানান, সংবাদমাধ্যমের এই ভুল তথ্যের কারণে তাদের পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।

আইনি পদক্ষেপের চিন্তা: ফারুক আহমেদ জানান, তারা এই মিথ্যা প্রতিবেদনগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা এবং দৈনন্দিন জীবনের চাপে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ইকবালের দুই স্ত্রী ও আট সন্তান রয়েছে, যাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।

গণমাধ্যমের দায়িত্ব: এই ঘটনা গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতার প্রশ্ন তোলে। ভুল তথ্য প্রচার শুধু একটি পরিবারের মানহানি করে না, বরং সমাজে বিভ্রান্তি ও বিদ্বেষ ছড়ায়। গণমাধ্যমের উচিত তথ্য যাচাই করে সংবাদ প্রকাশ করা এবং ভুল হলে তা স্বীকার করে সংশোধন করা।

মোহাম্মদ ইকবালের মৃত্যু একটি দুঃখজনক ঘটনা, যা আরও বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে যখন তাকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, তথ্যের যুগে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র:বিবিসি

Scroll to Top