
নিউজ ডেস্ক,নর্থ নিউজ ডট লাইভ। পবিত্র ঈদুল আজহার অন্যতম আমল কোরবানি। এই আমল শুধু একটি ধর্মীয় রীতি নয়, এটি সামাজিক সহমর্মিতা ও মানবিক সহবস্থানের একটি রূপ। তবে কোরবানির গোশতের বণ্টন নিয়ে সমাজে নানা রকম প্রচলন থাকলেও ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে এ বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।
সমাজের অনেক জায়গায় দেখা যায়, যারা কোরবানি করেন, তাদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে গোশতের নির্দিষ্ট অংশ নেওয়া হয় এবং তা সমাজের অন্যান্য সদস্যদের মাঝে বণ্টন করা হয়। কিন্তু ইসলামি শরিয়তে এই বাধ্যবাধকতা অনুমোদিত নয় বলে জানিয়েছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা।
মুফতি জাকারিয়া হারুন বলেন, “কোরবানির গোশত বিতরণ করা একটি মুস্তাহাব (উত্তম) আমল হলেও, কেউ বাধ্য হয়ে দিতে বাধ্য—এমনটি শরিয়তসম্মত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘কোনো মুসলমানের সম্পদ তার সন্তুষ্টি ছাড়া হালাল নয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২০৬৯৫)”
বণ্টনের শরিয়তসম্মত রূপ:
-
কোরবানিদাতা ইচ্ছামতো গোশত নিজে রাখতে পারেন, আত্মীয়-স্বজন ও দরিদ্রদের দিতে পারেন।
-
গোশতের এক-তৃতীয়াংশ গরিবদের, এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশীদের এবং এক-তৃতীয়াংশ নিজের জন্য রাখার বিষয়টি মুস্তাহাব বা উত্তম বলা হয়েছে, আবশ্যক নয়।
-
যদি কেউ পুরো গোশত নিজে রেখে দেন বা বিতরণ করেন, তাতে কোরবানির কোনো ক্ষতি হয় না।
হারাম উপার্জন ও কোরবানি:
মুফতি জাকারিয়া উল্লেখ করেন, যদি কারও উপার্জন হারাম হয়, তবে তার কোরবানির পশুর গোশত খাওয়া জায়েজ নয়। এ বিষয়টি সামাজিক বণ্টনে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
উপসংহার:
ইসলামে কোরবানির গোশতের বণ্টন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও, তা বাধ্যতামূলক কোনো সামাজিক নিয়মের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। কোরবানিদাতা স্বেচ্ছায় যেভাবে চান, সেভাবেই বণ্টন করবেন—এই স্বাধীনতা ইসলাম তাকে দিয়েছে।