“আমরা কারও করুণা নয়, নিজেদের প্রাপ্য হিস্যা চাই”—এ কথা জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “গঙ্গার পানির ওপর আমাদের প্রকৃতি ও জন্মগত অধিকার রয়েছে, এটি কেউ কেড়ে নিতে পারে না।”
বৃহস্পতিবার(১৫ মে) বিকেলে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “ফারাক্কা বাঁধ চালুর ফলে প্রায় চার কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা আজ হুমকির মুখে। ভারত এ বাঁধের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পানি অধিকার হরণ করে চলেছে। তারা আমাদের নদী, মাছ, প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করে এক ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে।”
ফরিদা আখতার আরও বলেন, “এই মৃত্যুবাঁধের প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গড়াই নদীর মাধ্যমে লবণাক্ততা প্রবেশ করছে। এর ফলে মাছের বৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে, বহু প্রজাতি আজ বিলুপ্তির পথে। নবগঙ্গা নদীর অববাহিকায় একসময় ৪১ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত, যার অনেকগুলোই এখন সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “একসময় পদ্মার ইলিশ ছিল আমাদের গর্ব, জাতীয় ঐতিহ্য। অথচ ফারাক্কা বাঁধের কারণে সেই ইলিশ এখন প্রায় বিলুপ্তির কাতারে। শুধু মানুষ নয়—প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণ, গাছপালা, পশু-পাখির জন্যও এই পানির অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া চরম অন্যায়।”
তিনি নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের জন্য বাঁচার পথ তৈরি করবেন।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান, পিআইবি মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ।