মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিককে হস্তান্তরের পর আবারও ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ৩৯ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন শতাধিক। সব মিলিয়ে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে নিহতের সংখ্যা ৫২ হাজার ৮৬০ ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। তারা জানায়, সোমবার সারা দিনে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বোমাবর্ষণে বহু বসতবাড়ি ও স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়।
তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি আরও জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানকে গাজাবাসীরা গণহত্যা হিসেবেই দেখছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, সোমবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৮৬২ জনে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৫০ জনের বেশি মানুষ।
গত ২৪ ঘণ্টার হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি। তবে বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বা রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধারে পৌঁছাতে পারেননি উদ্ধারকর্মীরা।
গত বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন চাপ ও আন্তর্জাতিক চেষ্টায় এক সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল ইসরায়েল। প্রায় দুই মাস গাজায় তুলনামূলকভাবে শান্তি বিরাজ করলেও, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল, হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে সেনা প্রত্যাহার না করায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ মার্চ থেকে আবার শুরু হওয়া বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২,৭৪৯ জন নিহত এবং ৭,৬০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এই নতুন দফার আক্রমণ কার্যত জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ জনগণ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী হয়ে পড়েছেন। অধিকাংশ অবকাঠামোও বা তো ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (ICJ) অধীন মামলার সম্মুখীন।