North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

চীনের সহায়তায় রাজশাহীতে পদ্মা পানি শোধন প্রকল্প

রাজশাহীর মানুষের বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে পদ্মা নদীর পানি শোধন করে সরবরাহের বিশাল উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী ওয়াসা। সোমবার (২৮ এপ্রিল) গোদাগাড়িতে নির্মিতব্য এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

চীনের হুনান কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড এর সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পটির কাজ ইতোমধ্যেই ২০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হলে প্রতিদিন ২০ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “এই প্রকল্প শুধু বিশুদ্ধ পানি নয়, বরং স্থানীয় জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখবে। চীন ও বাংলাদেশের যৌথ সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে।”

সরকারের যুগ্ম সচিব মো. সাইফুল ইসলাম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে বিশুদ্ধ পানির অভাব দিন দিন বাড়ছে। তাই ভবিষ্যতের চাহিদা মাথায় রেখেই এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “এই প্রকল্পটি দেশের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল আলম সরকার জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকি। এই সারফেস ওয়াটার ভিত্তিক প্রকল্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরতা কমবে এবং পরিবেশও রক্ষা পাবে।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. পারভেজ মাহমুদ বলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ি, কাটাখালি ও নওহাটার ৩০টি ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এটি সম্পন্ন হলে ২০৩৫ সালের মধ্যে পানির কভারেজ ৮৪ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত হবে।

প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ১ হাজার ৭৪৮ কোটি এবং চীনের কোম্পানি হুনান কনস্ট্রাকশন ২ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে ৪৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজশাহীর বিশুদ্ধ পানির সংকট অনেকটাই মিটবে এবং জন প্রতি পানি ব্যবহারের হার ৬৫ লিটার থেকে বেড়ে ১৪০ লিটারে উন্নীত হবে।

Scroll to Top