২০১৭ সালের মতোই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বিদেশ সফর শুরু করলেন সৌদি আরব দিয়ে। সেখানেই তিনি পেলেন রাজকীয় আতিথেয়তা এবং সই করলেন ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চুক্তি। এর মধ্যে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির চুক্তিকে বলা হচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি।
তবে সবচেয়ে বড় চমক ছিল সিরিয়ার উপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা, যা দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (MbS) অনুরোধে। এরপর সৌদি আরবে ট্রাম্পের আয়োজিত এক গোপন বৈঠকে অংশ নেন সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ। তিনি একসময় আল-কায়েদার নেতা ছিলেন এবং তাঁর মাথার দাম ছিল ১ কোটির বেশি ডলার।
আসাদ সরকারের পতনের পর এই আল-শারাআর নেতৃত্বেই পাঁচ মাস আগে বিদ্রোহীরা দখল করে দামাস্কাস। ট্রাম্প বললেন, “এবার সিরিয়ার পালা, দেখাও কিছু অসাধারণ।”
এর আগে তিনি ঘোষণা করেন ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা বন্ধ করা হবে, যা ইরানপন্থী বিদ্রোহীদের আক্রমণের জবাবে চলছিল। আর এই সফরে ইসরায়েল একেবারে উপেক্ষিত—ট্রাম্প ক্ষুব্ধ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর।
পরবর্তী গন্তব্য কাতার—এখানেই চরম বিতর্ক! কাতারের রাজপরিবার ট্রাম্পকে উপহার দিল বিলাসবহুল একটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান, যাকে বলা হচ্ছে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’। দাম ৪০০ বিলিয়ন ডলার! এত বড় উপহার কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগে পাননি।
এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলে। ট্রাম্পপন্থী কট্টরপন্থীরা যেমন লরা লুমার একে বললেন, “জিহাদিদের কাছ থেকে পাওয়া দাগী উপহার।”
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা বিদেশি উপহার গ্রহণ করতে পারেন না। অথচ এটিকে বৈধতা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি—যিনি আগে কাতারের লবিস্ট ছিলেন!
তবে বিতর্কের মাঝেও কাতারে ট্রাম্প স্বাক্ষর করেন কাতার এয়ারওয়েজের ৯৬ বিলিয়ন ডলারের বোয়িং বিমানের চুক্তিতে, যা ইতিহাসের সবচেয়ে বড়।