
নিউজ ডেস্ক,নর্থ নিউজ ডট লাইভ। তাইওয়ান ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক। চীন এবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে— “যুক্তরাষ্ট্র যেন আগুন নিয়ে না খেলে, কারণ তাইওয়ান একান্তভাবেই চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”
রোববার (১ জুন) চীনের এই মন্তব্য উঠে এসেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে।
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই প্রতিক্রিয়া এসেছে এমন এক সময়, যখন সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শাংরি-লা ডায়ালগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চীনকে এশিয়ার “অস্থিতিশীল শক্তি” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, চীন সামরিক প্রস্তুতির মাধ্যমে এশিয়ার শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করতে চায় এবং তাইওয়ান আক্রমণের মহড়া চালাচ্ছে।
চীনের প্রতিক্রিয়া ও হুঁশিয়ারি:
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই বক্তব্যকে “উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর” বলে অভিহিত করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে—
“তাইওয়ানকে চীনের বিরুদ্ধে একটি ‘কৌশলগত অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করবেন না। আগুন নিয়ে খেলা বিপজ্জনক হবে।”
এছাড়া বেইজিং বলেছে, তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দক্ষিণ চীন সাগরসহ পুরো এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।
চীন স্পষ্ট করে জানায়, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করেও তারা তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে পুনঃএকত্রীকরণের পথে অগ্রসর হবে। অপরদিকে, তাইওয়ানের গণতান্ত্রিক সরকার জবাবে বলেছে— তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে কেবল তাইওয়ানের জনগণ।
চীনের পাল্টা অভিযোগ ও প্রতিবাদ:
চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে বলেছে—
-
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে হামলাকারী অস্ত্র মোতায়েন করছে,
-
শীতল যুদ্ধের মানসিকতায় গোষ্ঠী রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে,
-
শান্তির পরিবর্তে সংঘাত উসকে দিচ্ছে।
বেইজিং এই বিষয়ে ওয়াশিংটনের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সামরিক মহড়া ও দ্বীপাঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা:
চীন বর্তমানে তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। একই সঙ্গে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু দ্বীপ ও প্রবালপ্রাচীর নিয়েও সার্বভৌমত্ব বিরোধ চলছে, যেখানে প্রায়ই দুই দেশের কোস্টগার্ডের মধ্যে টহল নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়।
চীনের অনুপস্থিতি চোখে পড়েছে:
এই বছর চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন শীর্ষ প্রতিরক্ষা সম্মেলন শাংরি-লা ডায়ালগে অংশ নেননি। তার পরিবর্তে একজন নিম্নপদস্থ প্রতিনিধি অংশ নেন, যা বিশেষজ্ঞদের মতে চীনের অসন্তোষের একটি কূটনৈতিক বার্তা।