North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

তিনি ওয়ার্ড মেম্বার, তবুও সংসার চলে ভিক্ষার টাকায়

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের সদস্য পেয়ারা বেগম (৪৫)। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সেবা করলেও দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত তিনি। সংসার চালাতে প্রতিদিনই তাকে হাত পাততে হয় মানুষের কাছে।

জোড্ডা পূর্ব ইউপির দক্ষিণ শ্রীহাস্য গ্রামের আলী আহমেদের স্ত্রী পেয়ারা বেগম এখন এক প্রতিবন্ধী ছেলেসহ চার সন্তান নিয়ে থাকেন মোকরা ইউপির চাঁন্দগড়া গ্রামের মোস্তফা নামে এক ব্যক্তির জায়গায়। টিনের ঘরে বসবাস করলেও ভূমিহীন এই জনপ্রতিনিধির নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।

১৯৯৯ সালে বিয়ের পর প্রথম সন্তান জন্ম নিলে তিনি জানতে পারেন, ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। সন্তানের চিকিৎসার জন্য স্বামীর শেষ সম্বল ৬ শতক জমি বিক্রি করতে হয়, এরপরই চরম আর্থিক সংকটে পড়েন তিনি। সংসার চালানোর উপায় না পেয়ে বেছে নিতে হয় ভিক্ষাবৃত্তি। ২০২২ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জনগণের ভালোবাসায় জয়ী হন পেয়ারা বেগম। তবে জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও তার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।

জনগণের সেবার দায়িত্ব পালনের পর সংসারের প্রয়োজনে তাকে আবারও মানুষের সাহায্য চাইতে হয়। বড় ছেলে পেয়ার আহমেদ (২৩) শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও এখনো পাননি কোনো সরকারি ভাতা। সংসারের খরচ জোগাতে তিনিও ট্রেনে ট্রেনে ভিক্ষা করেন।

পেয়ারা বেগম বলেন, “নিরুপায় হয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চাই, আবার সৎভাবে জনগণের সেবা করার চেষ্টা করি। সংসার চালাতে না পারলেও দায়িত্ব থেকে সরে যাইনি।”

এ প্রসঙ্গে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, “পেয়ারা বেগমের এই অবস্থা সম্পর্কে আগে জানতাম না। তাকে সরকারি খাস জমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো এবং তার যেনো ভিক্ষা করতে না হয়, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হবে।”

Scroll to Top