North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

তেল নয়, এবার প্রযুক্তি-পর্যটনেই বাজিমাত! ভিন্ন রূপে গড়ে উঠছে সৌদি আরব

সৌদি আরব আর শুধু তেলনির্ভর নয়—দেশটি এখন গড়ছে এক সম্পূর্ণ নতুন অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘোষিত ‘ভিশন ২০৩০’-এর আওতায় সৌদি আরব যে বিপ্লব ঘটাতে চলেছে, তা মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রই পাল্টে দিতে পারে।

২০১৬ সালে ঘোষিত ভিশনের মূল লক্ষ্য ছিল একক তেলনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে প্রযুক্তি, পর্যটন এবং বহুমুখী খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো দাঁড় করানো। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে একের পর এক মেগা প্রকল্প—লোহিত সাগর রিসোর্ট, কিদ্দিয়া এন্টারটেইনমেন্ট সিটি, এবং সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প ‘নিওম’—যা ভবিষ্যতের স্মার্ট শহর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

নিওমে থাকছে স্বয়ংক্রিয় পরিবহন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত নাগরিক সেবা এবং শতভাগ নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর জীবনযাপন। শুধু তাই নয়—পর্যটন খাতেও এসেছে ঐতিহাসিক পরিবর্তন। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো চালু হয় পর্যটক ভিসা, যার মাধ্যমে লাখো বিদেশি সৌদির ঐতিহ্যবাহী ও প্রাকৃতিক স্থানে ভ্রমণ করেছেন।

এক বিদেশি নারী পর্যটক জানান, “আমি গ্র্যান্ড প্রিক্স দেখতে সৌদি এসেছি। আধুনিক রেসিং এরিনা থেকে প্রাচীন শহরের উষ্ণ রঙের সৌন্দর্য—সব কিছুতেই মুগ্ধ আমরা।”

আল-বালাদসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক অঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় এখন নতুন বাণিজ্য সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি জনসমাগম হচ্ছে।

এই রূপান্তর শুধুমাত্র অর্থনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়। নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি, আন্তর্জাতিক কনসার্ট, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা—সব মিলিয়ে সমাজেও আসছে বড় পরিবর্তন।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈশ্বিক মন্দা, তেলের দামের ওঠানামা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এই গতিকে কিছুটা থমকে দিতে পারে। তবু সৌদি নেতৃত্ব বলছে, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তারা নতুন যুগের সৌদি আরব গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

Scroll to Top