ছবি: সংগৃহিত
দিনাজপুর প্রতিনিধি: জেলার ১৩টি উপজেলায় চলছে ভুট্টা কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম। চলতি মৌসুমে ভুট্টার আশানুরূপ ফলন, উচ্চদর এবং মাড়াই প্রযুক্তির উন্নয়নে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন, ফলে জেলায় তৈরি হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
জেলার কৃষকদের সহায়তায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভর্তুকিমূল্যে আধুনিক হারভেস্ট ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র সরবরাহ করেছে। এ যন্ত্রের মাধ্যমে অল্প সময়ে, কম খরচে মাড়াই সম্ভব হচ্ছে। জেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন জানান, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে ভুট্টা দ্রুত শুকানো সম্ভব হচ্ছে, যা ভুট্টা প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য সহায়ক।
নবাবগঞ্জ উপজেলার আদর্শ কৃষক মোকছেদ আলী বলেন, “এ বছর আড়াই একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, জমিতেই ৩২-৩৩ টাকা কেজি দরে কাঁচা ভুট্টা বিক্রি করতে পারছি।”
পাইকার ও কোম্পানিরাও সরাসরি মাঠ থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করছে। তাপপ্রবাহের কারণে চাতালে দ্রুত ভুট্টা শুকিয়ে নেওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে শুকনা ভুট্টা ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। থাইল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি সিপি ও দেশীয় কোম্পানি নারিশ জেলায় বড় আকারে ভুট্টা সংগ্রহ করছে।
ব্যবসায়ী মো. আব্দুল মজিদ জানান, “আমরা প্রতিবছর কাঁচা ভুট্টা কিনে শুকিয়ে মজুদ করি। মৌসুম শেষে ৮-১০ টাকা লাভে বিক্রি সম্ভব হয়।”
বিরল উপজেলার চাষি নুরুল ইসলাম জানান, একটি বিঘা জমিতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়, আর ভালো ফলনে ৪০-৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদন হয়। আধুনিক চাষ পদ্ধতি, সার প্রয়োগ ও সঠিক সময়ে সেচ দেয়ার ফলে ফলন ভালো হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে ৭৪,৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে ৭৮,৮০০ হেক্টর জমিতে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের প্রযুক্তিগত সহায়তায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪,৩০০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে।
সব মিলিয়ে দিনাজপুরে এবার ভুট্টা চাষে সাফল্য, সরাসরি বাজারে বিক্রি ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।