ছবি: সংগৃহিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, নর্থ নিউজ। গাজার খান ইউনিসের অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পাঁচ মাস বয়সী সিওয়ার আশৌর। ওজন মাত্র ২ কেজির একটু বেশি—যেখানে স্বাভাবিকভাবে তার ওজন হওয়া উচিত ছিল ছয় কেজির মতো। দুধে অ্যালার্জি থাকা এই শিশুটি পারছে না সহজলভ্য গুঁড়ো দুধ খেতে। অথচ ইসরায়েলি অবরোধে সংকট আরও তীব্র, শিশুখাদ্যও সেখানে স্বপ্নের মতো।
সিওয়ারের মুখে মাছি উড়ছে। তার মা নাজওয়া কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখছেন ওর মুখ, যেন কীটপতঙ্গ স্পর্শ না করতে পারে।
নাজওয়া বলেন, “ওর চোখে সবকিছু বোঝা যায়—ট্যাংকের শব্দ, রকেটের গর্জন—সবই বোঝে ও। ভয় পায়, হঠাৎ জেগে উঠে কাঁদতে শুরু করে।”
বিবিসির বিশেষ সংবাদদাতা লিখেছেন, এই শিশুদের চোখে আর বিস্ময় নেই, কারণ প্রতিদিন তারা মৃত্যুকে দেখছে—নিঃশব্দে, সামনে থেকে। ক্ষুধা তাদের চেতনা পর্যন্ত দখল করে ফেলেছে।
🔺 অবস্থা ‘ভয়াবহ’—জীবনযুদ্ধে হেরে যাচ্ছে সিওয়ারের মতো শিশুরা
নভেম্বরে জন্ম নেওয়া সিওয়ারের মা নাজওয়া এবং নানী রিম এক খুপরি ঘরে দিন কাটাচ্ছেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট চরম আকার নিয়েছে। হাসপাতাল থেকে এক ক্যান দুধ দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে শিশুটিকে। সেটিও এখন শেষপ্রায়।
জাতিসংঘের মতে, গাজার ৮০% অঞ্চল এখন হয় সেনাবাহিনীর দখলে অথবা এমন জায়গা যেখান থেকে মানুষজনকে সরে যেতে বলা হয়েছে। অথচ ইসরায়েলি সামরিক দপ্তর কোগাট বলছে, গাজায় খাদ্য সংকট নেই—যা আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েছে।
❗ শিশুর মৃত্যু আর অজানা কফিন
ফিলিস্তিনে শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। অনেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের নামে সমাধিস্থ। যাদের পরিচয় মেলে, তাদের নাম লেখা হয় কাফনের গায়ে। এই যুদ্ধের বাস্তবতা কোনো ক্যামেরার অজানা নয়—বিবিসির ক্যামেরাম্যানও প্রতিদিন হারাচ্ছেন মানসিক স্থিরতা।
জীবন নয়, এখন গাজায় লড়াই শুধু টিকে থাকার—নাজওয়া বললেন, “আমরা ভবিষ্যৎ ভাবি না, ভাবি কীভাবে আজ বাঁচব।”
সূত্র: বিবিসি