
নিউজ ডেস্ক, নর্থ নিউজ ডট লাইভ। বগুড়ায় কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠছে পশুর হাট। এবারে জেলার পশু বাণিজ্যে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বেশি।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বগুড়ার ১২টি উপজেলার শতাধিক হাটে ইতোমধ্যে পশু বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে। এবছর জেলায় মোট ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪২টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে চাহিদা ৭ লাখ ৯ হাজার ১০টি। ফলে ৩৮ হাজারের বেশি পশু অতিরিক্ত থাকায় আশপাশের জেলাতেও সরবরাহের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় খামারিরা জানান, মাঝারি দামের গরুর চাহিদা বেশি, যা সাধারণত ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে। হাটে গিয়ে দেখা গেছে, গরুর দাম ৭০ হাজার থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকার মধ্যে উঠানামা করছে। ক্রেতাদের মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেণির আগ্রহ সবচেয়ে বেশি মাঝারি দামের গরুতে।
শহরের চক সূত্রাপুরের গৃহবধূ মাহফুজা আক্তার বলেন, “ঈদের খরচ বেড়েছে, তাই আমরা ৬০-৭০ হাজার টাকার মধ্যে একটা গরু কেনার পরিকল্পনা করছি।”
শেরপুরের খামারি আব্দুল মান্নান জানান, “চিকিৎসা ও পরিচর্যার মাধ্যমে আমরা এবার গরু মোটা করার প্রচলিত পদ্ধতির বদলে বছরজুড়ে প্রাকৃতিক উপায়ে পালন করেছি। এতে খরচ বেড়েছে, গড়ে প্রতিটি গরুর পেছনে ৩৫-৪০ হাজার টাকা লেগেছে।”
হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। বগুড়া সদরের হাট ইজারাদার আবু তালেব বলেন, “বিক্রেতাদের সতর্ক করছি যেন টাকা পাওয়ার পর যাচাই করেন। পুলিশের টহলও বাড়ানো হয়েছে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিছুর রহমান জানান, “দেশীয় পশু দিয়েই এবার কোরবানির চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে। বিদেশি পশু আসছে না। প্রতিটি হাটে হেলথ চেকআপ বুথ ও ভেটেরিনারি অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা রোগাক্রান্ত পশু শনাক্ত করছেন।”
এই বছর কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি ও বাজার ব্যবস্থাপনায় বাড়তি নজর থাকায় আশা করা হচ্ছে, খামারিরা ন্যায্য দাম পাবেন এবং ভোক্তারাও সহনীয় দামে পশু কিনতে পারবেন।