ছবি: সংগৃহিত
নিউজ ডেস্ক: নর্থ নিউজ ডট লাইভ। লাউ, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বরজজাতীয় সবজি। বিশেষ করে বর্ষাকালে এর চাহিদা ও উৎপাদন দুটোই বাড়ে। লাউ শুধু পুষ্টিগুণে নয়, বাণিজ্যিক চাষের জন্যও কৃষকদের কাছে অত্যন্ত লাভজনক ফসল।
✅ চাষের উপযোগী সময়:
বর্ষাকালে (মে থেকে জুলাই) লাউ বপনের আদর্শ সময়। তবে আগাম লাউ বাজারে বেশি দাম পাওয়ায় অনেকে এপ্রিল থেকেই বীজ বপন শুরু করেন।
✅ জমি ও মাটির প্রস্তুতি:
-
লাউ ভালো জন্মায় দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটিতে।
-
জমি ভালোভাবে চাষ করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
-
পানি জমে না এমন উঁচু জায়গা বেছে নেওয়া উচিত।
✅ বীজ বপন পদ্ধতি:
-
প্রতি গর্তে ২–৩টি বীজ দিন।
-
গর্তের দূরত্ব ২ মিটার ও সারির দূরত্ব ২.৫ মিটার রাখুন।
-
বীজ বপনের আগে ট্রাইকোডার্মা মিশিয়ে নেওয়া ভালো।
✅ সার ব্যবস্থাপনা:
প্রতি গর্তে—
-
গোবর: ৫ কেজি
-
ইউরিয়া: ৩০ গ্রাম
-
টিএসপি: ২৫ গ্রাম
-
এমওপি: ২০ গ্রাম
চারা গজানোর ২০ দিন পর উপরি ইউরিয়া ও এমওপি প্রয়োগ করুন এবং ১৫ দিন পরপর দিন।
✅ পরিচর্যা ও লতানো পদ্ধতি:
লাউয়ের জন্য মাচা তৈরি বাধ্যতামূলক। এতে গাছ হাওয়ায় শুকায়, পচন কম হয় ও ফল ভালো হয়। আগাছা পরিষ্কার, মাটি আলগা করা এবং নিয়মিত পানি দেওয়া দরকার।
✅ রোগবালাই ও প্রতিকার:
-
লাউয়ের ফল পচা রোগ হলে বোর্দো মিক্সচার বা কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করুন।
-
পাউডারি মিলডিউ হলে সালফারজাত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে পারেন।
-
পোকামাকড় হলে নিম বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার ভালো।
✅ ফসল সংগ্রহ ও বাজার:
-
বীজ বপনের ৫০–৬০ দিনের মধ্যে লাউ তোলার উপযোগী হয়।
-
প্রতি গাছে ১০–১৫টি লাউ পাওয়া যায়।
-
এক একটি লাউ বাজারে বিক্রি হয় ৩০–৬০ টাকায়।
✅ লাভজনক দিক:
ছোট পরিসরে ১০০ গাছ লাগিয়ে একজন কৃষক বর্ষাকালে প্রায় ১৫,০০০–২০,০০০ টাকা লাভ করতে পারেন, যদি পরিচর্যা ভালো হয়।
উপসংহার:
লাউ এমন একটি ফসল যা স্বল্প পুঁজি ও সাধারণ যত্নেই চাষ করা সম্ভব। বর্ষাকালে এর উৎপাদন ভালো হয় বলে এটি কৃষকদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক সবজি। সঠিক প্রযুক্তি ও বাজার বোঝার সঙ্গে সঙ্গে এটি হতে পারে গ্রামের চাষিদের জন্য একটি অর্থনৈতিক মুক্তির পথ।