ছবি:সংগৃহিত
নিউজ ডেস্ক: নর্থ নিউজ ডট লাইভ। বাংলাদেশের বর্ষাকাল আর কচু যেন একে অপরের পরিপূরক। কচু চাষ একটি প্রাচীন কৃষিপদ্ধতি হলেও বর্তমানে তা বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি বর্ষাকালে কম খরচে ভালো ফলন দেয়, বিশেষ করে যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা সমস্যা রয়েছে।
✅ কচুর প্রকারভেদ:
-
পেটিকচু (খাওয়া হয় কাণ্ড)
-
লতি কচু (লতা ও পাতাও খাওয়া যায়)
-
মুখীকচু (মূল কচু বড় হয়, সংরক্ষণযোগ্য)
✅ চাষের সময় ও উপযুক্ত স্থান:
-
এপ্রিল থেকে জুলাই মাস কচু রোপণের উত্তম সময়।
-
জলাবদ্ধতা সহনীয় কচুর জন্য নিচু জমি ভালো, তবে মুখীকচুর জন্য উঁচু জমিও চলে।
-
দোআঁশ বা কাদামাটি কচু চাষে উপযুক্ত।
✅ রোপণ পদ্ধতি:
-
কচুর মা-গাছ বা কন্দ গাছ ২–৩ ফুট দূরত্বে রোপণ করুন।
-
প্রতি বিঘায় ১০–১২ মণ বীজ কন্দ প্রয়োজন।
-
আগাছামুক্ত জমিতে ১ ফুট গভীর করে লাগাতে হয়।
✅ সার ব্যবস্থাপনা:
প্রতি শতকে—
-
গোবর: ১৫–২০ কেজি
-
ইউরিয়া: ২৫০ গ্রাম
-
টিএসপি: ২০০ গ্রাম
-
এমওপি: ১৫০ গ্রাম
সার প্রয়োগের ১৫ দিন পর জমি কাদা করে দিতে হবে। ১ মাস পরপর আবার কাদা দিন।
✅ রোগবালাই:
-
পাতায় সাদা দাগ দেখা দিলে তামার ছত্রাকনাশক দিন।
-
কচুর ডগা পচা রোধে ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার করুন।
-
জৈব কীটনাশক ব্যবহার করলে পোকা কম হয় এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
✅ ফসল সংগ্রহ:
-
মুখীকচু: রোপণের ৬–৭ মাস পর
-
লতিকচু: রোপণের ৪৫–৬০ দিন পর লতা তোলা শুরু করা যায়
-
পেটিকচু: সাধারণত ৩–৪ মাসে উত্তোলনযোগ্য হয়
✅ বাজার ও লাভ:
-
কচুর বাজার দর বর্ষায় বেশি হয়।
-
প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬০–৮০ মণ পর্যন্ত কচু পাওয়া যায়।
-
লাভের পরিমাণ হয় ২৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত (প্রকারভেদে ভিন্ন)।
কচু এমন একটি ফসল, যা বর্ষাকালের পরিবেশের সাথে সহজেই খাপ খাইয়ে নেয়। সঠিক জাত, পরিচর্যা ও বাজার পরিকল্পনার মাধ্যমে এই সহজলভ্য সবজি কৃষকের অর্থনৈতিক সাফল্যের অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।