মাত্র ২৩০ টাকায় এক বিঘা জমি চাষ! যবিপ্রবির গবেষকের যুগান্তকারী উদ্ভাবন
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জাবেদ হোসেন খান উদ্ভাবন করেছেন নতুন এক প্রযুক্তি—ন্যানো ইউরিয়া। এই উদ্ভাবনের ফলে ৮২ শতাংশ পর্যন্ত ইউরিয়া সারের খরচ কমানো সম্ভব, যা বাংলাদেশের কৃষিখাতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।
বর্তমানে এক বিঘা জমিতে ইউরিয়া সার ব্যবহারে গড়ে খরচ হয় প্রায় ৪২০০ টাকা। কিন্তু ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহার করলে সেই খরচ কমে এসে দাঁড়ায় মাত্র ২৩০ টাকায়। এটি স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে জমিতে প্রয়োগ করা হয়, ফলে ব্যবহারে সময় ও শ্রম দুই-ই সাশ্রয় হয়।
গবেষক ড. জাবেদ হোসেন খান জানিয়েছেন, সাত বছরের গবেষণার ফল এই ন্যানো ইউরিয়া। এটি ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জৈব সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোলাবায়ো যবিপ্রবির ন্যাম ল্যাবের সঙ্গে প্রযুক্তি আদান-প্রদানে চুক্তি করেছে। মিনেসোটা-ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানও এই প্রযুক্তি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই ড. জাবেদ হোসেন খানের নামে প্যাটেন্ট করা হয়েছে।
এই আবিষ্কার বাংলাদেশের কৃষি খাতের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহারে উৎপাদন খরচ নাটকীয়ভাবে কমবে। একই সঙ্গে জমির উর্বরতা রক্ষা হবে এবং পরিবেশবান্ধব কৃষির সুযোগ তৈরি হবে। এটি দেশের কৃষকদের জন্য যেমন উপকারি হবে, তেমনি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তির মানচিত্রেও নতুনভাবে পরিচিত করে তুলবে।
উদ্যোক্তাদের মতে, ন্যানো ইউরিয়া বাংলাদেশের কৃষিতে এক নতুন বিপ্লব ডেকে আনতে চলেছে। এটি শুধু সাশ্রয়ী নয়, বরং টেকসই কৃষির দিকেও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।