বিশ্বের কোটি কোটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর প্রিয় নেতা, পোপ ফ্রান্সিস সোমবার(২১ এপ্রিল) মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফুসফুসের জটিল সমস্যায় ভুগছিলেন। ভ্যাটিকান জানিয়েছে, তিনি রোমে কাসা সান্তা মার্তার নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নিউমোনিয়ার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে এবং ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়। কিছুদিন আগে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও শেষ পর্যন্ত আর সুস্থ হয়ে উঠেননি।
পোপ ফ্রান্সিসের আসল নাম ছিল জর্জ মারিও বারগোগ্লিও। ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ইতালীয় অভিবাসী ও রেলওয়ের হিসাবরক্ষক।
জীবনের শুরুতে তিনি কেমিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন, পরে ধর্মের পথে পা বাড়ান। ১৯৬৯ সালে তিনি ধর্মযাজক হন এবং ১৯৯৮ সালে আর্জেন্টিনায় আর্চবিশপের দায়িত্ব পান।
২০১৩ সালে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট অবসর নেওয়ার পর তাঁকে পোপ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম পোপ।
দীর্ঘ ১২ বছর তিনি রোমান ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্ব দিয়েছেন। অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি বারবার গির্জায় সংস্কার ও উদারনীতির পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি ধর্মীয় সহাবস্থানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গাদের বিষয়েও সরব ভূমিকা রাখেন এবং তাঁদের কাছে সবার পক্ষ থেকে ক্ষমা চান।
এ বছর জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয় তাঁর আত্মজীবনী ‘হোপ’, যেখানে তিনি জীবনের নানা অধ্যায় তুলে ধরেছেন।
পোপ ফ্রান্সিস শুধু ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের নয়, বরং গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে মানবতা, ক্ষমাশীলতা ও সহমর্মিতার প্রতীক হয়ে থাকবেন।