North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

মার্কিন শুল্ক আরোপ, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ভারত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, বিশেষ করে ভারতের ওষুধ শিল্পের জন্য। গত সপ্তাহে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পিযুষ গোয়েল যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, যাতে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে দেশটি মুক্ত থাকতে পারে।

ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি ২ এপ্রিল থেকে ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন। এই শুল্ক ভারতীয় জেনেরিক ওষুধ শিল্পকে প্রভাবিত করতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জেনেরিক ওষুধ প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যবহৃত হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা ব্র্যান্ডেড ওষুধের সস্তা সংস্করণ হিসেবে জনপ্রিয়।

আইকিউভিয়ার গবেষণায় জানা গেছে, ২০২২ সালে ভারত থেকে আমদানি করা জেনেরিক ওষুধের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাতে ২১৯ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, যদি একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত না হয়, তাহলে ট্রাম্পের শুল্ক ভারতীয় জেনেরিক ওষুধের বাজারকে অস্থিতিশীল করে দিতে পারে, যার ফলে কিছু কোম্পানি বাজার ছাড়তে বাধ্য হতে পারে এবং ওষুধের ঘাটতি তৈরি হতে পারে।

ইয়েল ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ড. মেলিসা বারবার জানিয়েছেন, শুল্ক বাজারে সরবরাহ এবং চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের দরিদ্র জনগণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক রোগী ইতোমধ্যে ওষুধের উচ্চমূল্যের কারণে চিকিৎসা নিতে পারছেন না। ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির কারণে, যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতাল ও জেনেরিক ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর মধ্যে চাপ বাড়ছে, কারণ ৮৭ শতাংশ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি হয়, এবং শুল্ক বাড়ানোর ফলে কাঁচামালের দাম বেড়ে গেছে।

ভারতের বৃহত্তম ওষুধ প্রস্তুতকারক সান ফার্মার চেয়াম্যান দিলীপ শঙ্খবি জানিয়েছেন, শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থানান্তরকে অর্থনৈতিকভাবে অসম্ভব করে তোলে, কারণ সস্তা ওষুধের জন্য এই সিদ্ধান্ত কার্যকর নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের উচিত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করা, কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ওষুধ রফতানির পরিমাণ কম হলেও এর প্রভাব যথেষ্ট ছোট হবে।

সূত্র: বিবিসি

Scroll to Top