প্রায় দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২৭ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে। অর্থনৈতিক চাপে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির পর এটি দেশের জন্য বড় ধরনের স্বস্তির বার্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, বুধবার (৩০ এপ্রিল) শেষে দেশের মোট বৈদেশিক রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ‘বিপিএম-৬’ পদ্ধতিতে হিসাব করলে এর পরিমাণ ২২ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার।
তিনি জানান, রিজার্ভ বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান তিনটি কারণ রয়েছে—প্রবাসী আয় অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়া, রফতানিতে চাঙ্গাভাব, এবং অর্থপাচারে লাগাম টানা। একই সঙ্গে ডলারের বিনিময় হার ১২২ টাকায় দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকাও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
এপ্রিলের প্রথম ২৯ দিনেই দেশে ২৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। মার্চে এসেছে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার, যা দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ। চলতি অর্থবছরের প্রতিটি মাসেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যয়যোগ্য নিট রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
২০২২ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ডলার বিক্রির চাপে তা ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে নেমে যায় ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়নে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে বরং বাজার থেকে ডলার কিনতে শুরু করে, যার প্রভাব এখন দৃশ্যমান।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এ রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের ধারা বজায় থাকলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আরও দৃঢ় হবে এবং বৈদেশিক ঋণের উপর নির্ভরতা কমে আসবে।