ফিলিস্তিনি লেখিকা আলা রেজওয়ান, ছবি: সংগৃহিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, নর্থ নিউজ ডট লাইভ। “আমরা কেবল মৃতদেহ নই, আমরাও মানুষ!” — এমন হৃদয়চেরা আর্তি ফুঁসে উঠেছে ফিলিস্তিনি লেখিকা ও অনুবাদক আলা রিদওয়ানের কলমে। গাজা থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা এই নারী মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ‘মিডলইস্ট আই’-এ প্রকাশিত তাঁর লেখায় তুলে ধরেছেন গণমাধ্যম ও বিশ্ব বিবেকের নীরব সহযোগিতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ভয়াবহতা।
“ইসরায়েল আমার পরিবারকে হত্যা করেছে, আমার ঘর মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে,”— এমন অকপট স্বীকারোক্তিতে তিনি লিখেছেন, “আমরা যেন মিডিয়ার চোখে অদৃশ্য মানুষ। পশ্চিমা ও আরব সংবাদমাধ্যম আমাদের অস্তিত্ব মুছে দিচ্ছে—কখনো বোমায়, কখনো হেডলাইনে!”
গাজার নাসের পাড়ার স্মৃতি টেনে রিদওয়ান লিখেছেন, “প্রাচীরগুলো, রান্নাঘর, পর্দাগুলো—সব ছিল ভালোবাসায় গড়া। সেই বারান্দা যেখানে আমার যমজ সন্তানেরা হাঁটতে শিখেছিল, সেই বুকশেলফ যেটি বইয়ে ঠাসা ছিল—সব এখন ধ্বংসস্তূপ।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গণমাধ্যম শুধু ইসরায়েলি নাগরিকদের দুঃখগাথা তুলে ধরে। কিন্তু গাজার মা, শিশু, চিকিৎসক, শিক্ষক—সবাই যেন শুধুই ‘সংখ্যা’। আমাদের অনুভব করা হয় না। আমাদের মানসিক যন্ত্রণা সংবাদে ঠাঁই পায় না।”
🔍 ‘শব্দচয়ন দিয়েই চলে ইতিহাসের নিয়ন্ত্রণ’—এমন দাবি তুলে তিনি বলেন, “গণহত্যার ভিডিও থাকলেও তা ‘অভিযোগ’ হিসেবে পরিবেশন করা হয়। সেনা হামলাকে বলা হয় ‘নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর উপর অভিযান’। শব্দের খেলায় ঢেকে ফেলা হয় বাস্তবতা।”
রাফাহে চিকিৎসকদের হত্যার উদাহরণ টেনে তিনি লিখেছেন, “যেখানে সবকিছু ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, সেখানেও মিডিয়া সন্দেহের কুয়াশা ছড়ায়।”
📚 লেখার শেষে এক জ্বালাময়ী বার্তায় তিনি বলেন,
“আমরা শুধু ভুক্তভোগী নই। আমাদের নাম আছে, স্বপ্ন ছিল, ভালোবাসা ছিল। কিন্তু আজ, প্রায় ২০ মাসের গণহত্যার পরও আমাদের কথা কেউ শুনছে না। এই নীরবতা ধ্বংসের শব্দকেও ছাপিয়ে গেছে।”