শরীরচর্চা নয়, এবার মনচর্চার ডাক দিয়েছে হাঁটাহাঁটি! না, জিম নয়। মোবাইলে গানও নয়। শুধু আপনি, আপনার নিঃশ্বাস আর চারপাশের শব্দ—এই নিয়ে শুরু হোক এক নতুন লাইফস্টাইল ট্রেন্ড—”সাইলেণ্ট ওয়াকিং”!
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দিনে মাত্র ১৫-২০ মিনিট “চুপচাপ হাঁটা” মনকে এমনভাবে শিথিল করে, যেন কেউ এক ঘণ্টা মেডিটেশন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. লরা হেনরি বলছেন—“মানুষ যখন একা হাঁটে, তখন তাদের মস্তিষ্ক নিজের সঙ্গে কথা বলে, যা মানসিক ভার হালকা করে দেয়।”
হাঁটার এই ধারা এখন ইনস্টাগ্রাম, টিকটক থেকে সব খানেই ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ বছরের তরুণী কেসি ম্যাকগ্রেগর জানালেন: “ব্রেকআপটা আমার কাছে যেন এক অদৃশ্য ভূমিকম্প ছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার রোদেলা শহরে থেকেও আমার দিনগুলো যেন ধোঁয়াটে হয়ে গিয়েছিল। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতাম না, ফোন ধরতাম না, এমনকি আয়নার দিকে তাকানোর সাহসটুকুও হারিয়ে ফেলেছিলাম। একদিন হঠাৎ বিকেলে গিয়েছিলাম সান্তা মনিকার সমুদ্রের ধারে—একাই। প্রথম দু’দিন শুধু বসে বসে কাঁদতাম, মনে হতো সমুদ্রের ঢেউগুলো যেন আমার কষ্ট বুঝতে পারছে। কিন্তু তারপর একদিন হঠাৎই মনে হল—এই নীরবতা আমাকে নিরাময় করছে। আমি আবার শ্বাস নিতে পারছি। এখন ওই সমুদ্রের ধারে হাঁটা আমার রোজকার অভ্যাস। চিকিৎসা, থেরাপি, বন্ধু—সবকিছুর বাইরেও প্রকৃতি যেন আমার সবচেয়ে বড় সহচর হয়ে উঠেছে।”
এই হাঁটার বিশেষত্ব?
কোনও হেডফোন নয়।
কোনও ফোন নয়।
কোনও গল্প নয়।
শুধু প্রকৃতির শব্দ শুনুন।
পার্ক, রাস্তার ধারে গাছতলা, এমনকি বাড়ির ছাদ—সব জায়গাই হতে পারে মনের থেরাপি সেন্টার!
বিশেষজ্ঞ টিপস:
হাঁটার সময় ফোন বন্ধ করুন বা “এয়ারপ্লেন মোড” দিন।
চোখ রাখুন গাছে, আকাশে, দূরের আলোয়।
মন যদি ভাবনায় ডুবে যায়, তাকে জোর করে কিছু ভাবতে বাধ্য করবেন না।
মনে রাখবেন—যেখানে মন থেমে যায়, সেখান থেকেই হাঁটা শুরু হোক। এই “চুপচাপ হাঁটা” এক সময় আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে!