ভারত এবং পাকিস্তান, দুই প্রতিবেশী দেশের সামরিক শক্তি এবং তাদের সামরিক খরচ, প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। এই দুই দেশ নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে ব্যাপকভাবে সামরিক প্রযুক্তি এবং অস্ত্রের উন্নয়ন করছে, এবং সামরিক খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক, দুই দেশের সামরিক শক্তি এবং ব্যয়ের বিশ্লেষণ।
ভারত বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সামরিক শক্তি হিসেবে পরিচিত। ভারত তার সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে এবং আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। ২০২৪ সালে ভারত তার সামরিক খাতে ৮৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে, যা দেশের মোট জিডিপির ২.৩ শতাংশ।
ভারতের সামরিক বাহিনীতে মোট ৫,১৩৭,৫৫০ জন সদস্য রয়েছে, যা পাকিস্তানের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে ২,২২৯টি সামরিক বিমান রয়েছে, যার মধ্যে অনেকটা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে। এছাড়াও, ভারত ৩,১৫১টি যুদ্ধ ট্যাংক ব্যবহার করছে, যা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি।
ভারতের নৌবাহিনীও সমুদ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ শক্তিশালী, যেখানে ২৯৩টি নৌযান রয়েছে। ভারত তার দীর্ঘ উপকূলে (৬,১০০ কিলোমিটার) এই নৌযানগুলোর মাধ্যমে সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখে।
পাকিস্তান, বিশ্বের ১২তম বৃহত্তম সামরিক শক্তি, ২০২৪ সালে সামরিক খাতে ১০.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে, যা তার জিডিপির ২.৭ শতাংশ। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীতে ১,৭০৪,০০০ জন সদস্য রয়েছে, এবং তার সামরিক শক্তি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান ১,৩৯৯টি সামরিক বিমান এবং ১,৮৩৯টি যুদ্ধ ট্যাংক পরিচালনা করে।
পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে ১২১টি নৌযান রয়েছে, যা তার ১,০৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলে নিরাপত্তা প্রদান করে। তবে, পাকিস্তানের সামরিক শক্তি ভারতের তুলনায় অনেক ছোট, তবে তারা চীনের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং চীন থেকে অস্ত্র এবং প্রযুক্তির বড় একটি অংশ আমদানি করে থাকে।
ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ই সামরিক খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে, যা তাদের প্রতিযোগিতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের প্রতিফলন। ২০২৪ সালে ভারতের সামরিক ব্যয় ছিল ৮৬ বিলিয়ন ডলার, যা পাকিস্তানের ১০.২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় অনেক বেশি। তবে, পাকিস্তান তার জিডিপির ২.৭ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করছে, যা ভারতের তুলনায় বেশি শতাংশ।
ভারত তার সামরিক শক্তি বাড়াতে বিশ্বব্যাপী অস্ত্র আমদানি করছে, বিশেষ করে রাশিয়া, ফ্রান্স, ইসরায়েল, এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অন্যদিকে, পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে প্রায় ৮১% অস্ত্র আমদানি করছে, এবং চীনের প্রযুক্তি পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই সামরিক প্রতিযোগিতায় জড়িত এবং তাদের সামরিক খাতে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করছে। ভারত তার সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করতে, এবং পাকিস্তান চীনের সাহায্যে তার সামরিক শক্তি শক্তিশালী করতে চেষ্টা করছে। দুই দেশের মধ্যে এই সামরিক প্রতিযোগিতা সামরিক খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী একটি শক্তি দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
