North News.live

উত্তরবঙ্গের কণ্ঠস্বর

গাজা পুড়ছে, ট্রাম্প পাচ্ছেন বিলিয়ন ডলারের উপহার! আরব নেতাদের আচরণে তোলপাড়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরকে ঘিরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসকরা। এসব দেশে ট্রাম্পকে দেওয়া হয়েছে বিলাসবহুল উপহার, বিপুল অর্থ ও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি—তবে গাজায় চলমান সংঘর্ষ বন্ধের ব্যাপারে কোনো কথাই উঠেনি।

মিশরের কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়ামানি আল-খোলি এ প্রসঙ্গে বলেন, “বিশ্ব ইতিহাসে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এত পরিমাণ উপহার বা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্বযুদ্ধের সময়েও না।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “গাজায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হচ্ছে, অথচ আরব নেতারা নীরব থেকে ট্রাম্পকে উপঢৌকন দিয়ে যাচ্ছেন?”

অর্থনীতিবিদ হানি তৌফিক বলেন, “এই আচরণ আরব নেতৃত্বের লজ্জাজনক আত্মসমর্পণ। যখন গাজা রক্তাক্ত, তখন তারা ট্রাম্পকে বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে!” তিনি বলেন, এই অন্যায় শুধু ইতিহাস নয়, সৃষ্টিকর্তার কাছেও জবাবদিহির কারণ হবে।

মিশরের সাবেক অর্থনীতিবিদ এবং কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ডিন আলিয়া আল-মাহদির প্রশ্ন, “এই দান-উপহারের প্রতিদান কী? মানুষ মরছে গাজায়, আর আপনি স্বাগত অনুষ্ঠান করছেন!” তিনি বলেন, প্রকৃত নেতৃত্ব মানে জনগণের পাশে দাঁড়ানো, কোনো বিশ্বশক্তির তোষামোদি নয়।

আরেক সাবেক কূটনীতিক ফাওজি আল-আশমাওয়ি তীব্র ভাষায় বলেন, “আরব দেশগুলোর উচিত ছিল ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, চুক্তি বাতিল করা বা আমেরিকায় বিনিয়োগ স্থগিত করা। কিন্তু তারা তা করেনি, বরং নীরব সম্মতিতে গাজায় রক্তপাত চলতে দিয়েছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক কামাল হাবিব বলেন, “এই সফর ছিল কেবল কূটনৈতিক বিনিময় নয়, বরং আমেরিকার কাছে আরব নেতৃত্বের আত্মসমর্পণের প্রকাশ।” তিনি আরও বলেন, “এই তিনটি দেশ যদি সত্যিই চায়, তারা গাজার পাশে দাঁড়াতে পারত। কিন্তু বাস্তবে যা হয়েছে, তা হলো গাজার নীরব বিক্রি।”

হাবিব আরও সতর্ক করে বলেন, “গাজা কোনো দামের বিনিময়ে কেনাবেচার বস্তু নয়—এটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক চিরন্তন প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে থাকবে।”

Scroll to Top