ছবি: সংগৃহিত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি তিন পাতার দীর্ঘ চিঠি দিয়েছে বিএনপি, যেখানে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবিক করিডর ইস্যু, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং একটি নির্দলীয় জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত এই চিঠিটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও গত ৯ মাসে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করে বিএনপি।
বিএনপির ভাষায়, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সরকারে থাকা কিছু উপদেষ্টা নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকায় নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে বিএনপি তাদের অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের বক্তব্যে ও কর্মকাণ্ডে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করে বিএনপি।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার সনদ তৈরি হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন একটি দলের কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি সরকারকে বিব্রত করেছে বলে দাবি করা হয়। বিএনপি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ গঠনের কথা উল্লেখ করে জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ নেওয়ার সুযোগ না দেওয়া আইন ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি বলেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে তারা মনে করে, নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংস্কার প্রক্রিয়াও চালিয়ে যাওয়া জরুরি।
সবশেষে বিএনপি উল্লেখ করে, জনজীবনের স্থিতিশীলতা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং বিনিয়োগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারকে সর্বদলীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার আহ্বান জানায়।