জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস, ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক,নর্থ নিউজ ডট লাইভ। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক হামলাকে আর সহ্যযোগ্য নয় বলে কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেছেন। ফিনল্যান্ডের তুরকু শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, হামাসবিরোধী যুদ্ধের নাম দিয়ে যে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই যৌক্তিক ব্যাখ্যা পাচ্ছে না।
ম্যার্ৎসের এ বক্তব্যকে জার্মান রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরের হামলার পর থেকে সবচেয়ে স্পষ্ট বার্তা। ঐতিহাসিকভাবে নাৎসি যুগের অপরাধের কারণে ইসরায়েলের প্রতি বিশেষ দায়বদ্ধতা মানা হলেও, এবার জার্মানির শীর্ষ নেতার কণ্ঠে বিরল কঠোরতা ধরা পড়ল।
তিনি বলেন, গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযান সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের উদ্দেশ্য পূরণে সফল নয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি তিনি গভীর সমালোচনার চোখে দেখছেন। এই হামলা আর যুক্তিসঙ্গত নয় বলে সরাসরি জানিয়েছেন তিনি।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পর ম্যার্ৎস জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বার্লিনে আমন্ত্রণ জানাবেন। তবে এখন তার বক্তব্যে পরিবর্তন এসেছে, যদিও অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল ও সরকারে ক্ষমতাসীন সমাজতান্ত্রিক ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলে অস্ত্র রফতানি বন্ধের দাবি তুলেছেন। সাম্প্রতিক একটি জরিপে ৫১ শতাংশ জার্মান নাগরিক ইসরায়েলে অস্ত্র রফতানির বিরোধিতা করেছেন। পাশাপাশি, ২০২১ সালে যেখানে ৪৬ শতাংশ জার্মান ইসরায়েলকে ইতিবাচকভাবে দেখতেন, ২০২৫ সালে সেই পরিমাণ কমে মাত্র ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
ইসরায়েলের বার্লিন দূতাবাস ম্যার্ৎসের সমালোচনাকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছে এবং তাকে বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের ভুমিকায় এখন বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। কানাডা, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পর এবার জার্মানির সুরেও গাজার সংকট নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের সংকেত মিলছে।
সূত্রঃ আল জাজিরা